নিজস্ব প্রতিবেদক: ডিওবি নামক এ মাদকের চালান সম্প্রতি পোল্যান্ড থেকে কুরিয়ারের মাধ্যমে দেশে আনা হয় বলে জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ফজলুর রহমান জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে প্রবেশ করছে উচ্চমানের মাদক ডিওবি (ডাইমিথোক্সিবোমো এমফিটামিন)। দেশে প্রথম ধরা পড়া এ মাদক আনার চক্রের সঙ্গে জড়িত দুই জনকে সোমবার খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে এলএসডি নামের মাদক কেনার ফাঁদ পেতে ‘ডিওবি’ নামের এ নতুন মাদকের সন্ধান পেয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের ঊধ্বর্তন এই কর্মকর্তা জানান, গত অগাস্টে তারা জানতে পারেন বাংলাদেশে নতুন এক ধরনের মাদক দেশে আসছে। নিয়মিত অনুসন্ধানের পাশপাশি নতুন সেই মাদকের সন্ধান করতে গিয়ে একটি ‘কি ওয়ার্ড’ পান তারা। এর সূত্র ধরে নিশ্চিত হওয়া যায় নতুন এই মাদক দেশে ঢুকেছে এবং চক্রটিকে গ্রেপ্তার করার কৌশল হিসাবে একটি চক্রের সঙ্গে এলএসডি (লাইসার্জিক অ্যাসিড ডায়েথিলামাইড) নামের মাদক কেনার জন্য একটি ফাঁদ পাতা হয়। তিনি জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রটির চাহিদা অনুযায়ী খুলনা থেকে সুন্দরবন কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঁচটি এলএসডি স্ট্রিপ ঢাকার এলিফেন্ট রোড শাখায় পাঠায়, যা পরে জব্দ করা হয়। এরপর এ কুরিয়ারের মাধ্যমে আসা এলএসডি মাদকের সূত্র ধরে সোমবার খুলনায় গিয়ে প্রযুক্তিগত মাধ্যম ব্যবহার করে সরবরাহকারীর অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে মুজগন্নী আবাসিক এলাকা থেকে আফিস আহমেদ শুভ(৩১)কে গ্রেপ্তার করা হয়। শুভ’র দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে, তাকে সঙ্গে নিয়ে তার সঙ্গী পূজাখোলা এলাকার অর্ণব কুমার শর্মার (৩০) বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০ স্ট্রিপ এলএসডিসহ তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ এবং ঘরে তল্লাশী চালিয়ে নতুন মাদক ডিওবির ৯০টি স্ট্রিপ পাওয়া যায়।
একই সময় খুলনা সুন্দরবন কুরিয়ারের ম্যানেজার মামুনুর রশিদকে (৩২) গ্রেপ্তার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় , গ্রেপ্তারকৃত আফিস আহমেদ শুভ (৩১) ও অর্ণব কুমার শর্মা (৩০)কে জিজ্ঞাসাবাদে এ মাদক খুলনা ও ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদকসেবী কিছু শিক্ষার্থীর কাছে বিক্রিও করেছেন বলে জানিয়েছেন। অধিদপ্তরের প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা সংবাদ সম্মেলনে জানান, এ ধরনের মাদক সেবনকারীদের খিঁচুনি হয়, শরীর সংকুচিত হয়ে আসে। নিজের নিয়ন্ত্রণ নিজের কাছে থাকে না। তাকে যে কোনো কাজে ব্যবহার করা যায়। এ কারণে এটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রোর উপ-পরিচালক মো: রাশেদুজ্জামান ৬৪ বাংলা টিভি’কে জানান, শুভ একজন ওয়েব ডিজাইনার। হ্যন্ডিক্রাফটের কাজ করে থাকেন। অর্ণব তার সহযোগী। সে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্সে লেখাপড়া করছে। অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, নতুন এ মাদক প্রতি স্ট্রিপ ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। অধিকাংশ সময় কুরিয়ারের মাধ্যমে এবং উড়োজাহাজে করে সিম কার্ডের মতো ক্ষুদ্র এসব স্ট্রিপ সাধারণ ডকুমেন্টের মত বাংলাদেশে আসছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply